এটি ছত্রাকজনিত রোগ। এ রোগের আক্রমনে পরিপক্ক ফলের গায়ে বাদামি রংয়ের দাগ পরে এবং পরবর্তীকালে ফল পচে খাওয়ার অযোগ্যহয়ে যায়।
রোগ-বালাই ও ব্যবস্থাপনা
রোগ-বালাই ব্যবস্থাপনার জন্য অতিরিক্ত ডালপালা ছাটাই করে কাঁঠাল গাছের সঠিক আকার দিতে হবে। সময়মত প্রুনিং এবং ট্রেনিং করতে হবে। প্রুনিং এবং ট্রেনিং এ ধারালো যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হবে। ভাঙা ডালপালা করাত দিয়ে সুন্দর করে কেটে প্রুনিং পেস্ট লাগিয়ে দিতে হবে।
কাঁঠালের গুরুত্বপূর্ণ একটি রোগ হলো ফলপচা রোগ। এতে কচি ফলের গায়ে বাদামী রঙয়ের দাগের মত হয়ে ফলের পচন হয় এবং ঝরে পড়ে। এ রোগ দমনের জন্য পুরুষ ও স্ত্রী পুষ্পমঞ্জরী বের হওয়ার সময় থেকে ১০দিন পর পর দুই/তিন বার ম্যাকুপ্র্যাক্স বা কুপ্রাভিট অথবা সমগোত্রীয় ছত্রাকনাশক প্রতি লিটার জলতে দু’ গ্রাম হারে অথবা ইন্ডোফিল এম-৪৫/ডায়থেন এম ৪৫ অথবা সমগোত্রীয় ছত্রাকনাশক প্রতি লিটার জলতে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
কাঁঠালের কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণে গাছের গুড়িতে গর্ত হয়ে থাকে। এর প্রতিকারের জন্য সুচালো লোহার শলাকা গর্তের ভেতর ঢুকিয়ে খুঁচিয়ে পোকার কীড়া মারতে হবে। গর্তের মুখ পরিস্কার করে এর মধ্যে কেরোসিন বা পেট্রোল ঢুকিয়ে গর্তের মুখ কাদা মাটি দিয়ে বন্ধ করে দিতে হবে। ফুল আসার সময় সুমিথিয়ন বা ডায়াজিনন ৬০ ইসি অথবা সমগোত্রীয় কীটনাশক প্রতি লিটার জলতে ২ মি.লি হারে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর দুই/তিন বার স্প্রে করতে হবে।
সার প্রয়োগ
মাটির গুণাগুণের উপর ভিত্তি করে বছরে দু’বার সার প্রয়োগ করা উচিত্। প্রথম কিস্তি মে মাসে এবং দ্বিতীয় কিস্তি অক্টোবর মাসে প্রয়োগ করতে হবে। বয়স্ক গাছের গোড়া থেকে কমপক্ষে তিন ফুট দূর দিয়ে রিঙ পদ্ধতিতে কাঁঠাল গাছে সার প্রয়োগ করতে হবে। রোপণের পর এক থেকে তিন বছর পর্যন্ত ৩০ কেজি গোবর, ৪০০ গ্রাম ইউরিয়া, ৪০০ গ্রাম টিএসপি, ৩৫০ গ্রাম এমপি এবং ৮০ গ্রাম জিপসাম; চার থেকে ছয় বছর পর্যন্ত ৪০ কেজি গোবর, ১৫ বছরের উর্ধ্বে ৬০ কেজি গোবর, ১২০০ গ্রাম ইউরিয়া, ১৬০০ গ্রাম টিএসপি, ১২৫০ গ্রাম এমপি ও ৩০০ গ্রাম জিপসাম প্রয়োগ করতে হবে। চারা রোপণের পর তিন বছর পর্যন্ত মোট ইউরিয়া এবং পটাশ সারকে ছয় ভাগে ভাগ করে দু’মাস পর পর প্রয়োগ করলে গাছের দ্রুত অঙ্গজ বৃদ্ধি হয়ে থাকে।
নোটঃ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ, রোগ মুক্ত বীজ ও চারার ব্যবহার এবং সুষম সারের ব্যবহার হলে এমনিতেই যে কোন ফলের রোগ বালাই কম হবে। সময় মত সেচের ব্যবস্থা করা, সঠিক নিয়মে কীটনাষক স্প্রে করা, ফল বাগানে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা সহ সঠিক নিয়মে চাষাবাদ করলে এমনিতেই রোগ বালাই কম হবে।